লেগুনা চালকের আড়ালে দুর্ধর্ষ ছিনতাই প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২১, ২০২৪ নির্জন জায়গা কিংবা অন্ধকার সড়ক রাজধানীবাসীর কাছে কখনো কখনো হয়ে ওঠে এক আতঙ্কের নাম। দিনের বেলা যেমন তেমন, রাত নামলেই এসব জায়গায় ঘটে দুর্ধর্ষ ছিনতাইয়ের ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে উৎপাত কিছুটা কমলেও কিছুদিন পর আবারো বেড়ে চলে এ ধরনের অপরাধ। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তুহিন ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। ক্লাস শেষে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে হঠাৎ করেই মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়কে ৫ থেকে ৬ জন ঘিরে ধরে তাকে। গলায় ও পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে কেড়ে নেয় মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র। সে সময় তাকে মারধরও করা হয়। এদিকে মোহাম্মদপুরের সড়কে এ ধরনের বিষয় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এ এলাকা এখন ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু মোহাম্মদপুরই নয়, মিরপুর, শাহআলী, ভাষানটেক, কালশি রোড, দারুসালাম, বেড়িবাঁধ, তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী মোড়ের আশপাশের এলাকায় এদের বিচরণ বেশি দেখা যায়। এমনি এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় রাজধানীর শাহআলী থেকে ইব্রাহীম ও আলাউদ্দিন নামের সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে রূপনগরের ইস্টার্ন হাইজিং এলাকা থেকে ধাওয়া করে শাহআলী থানার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি লেগুনা (ঢাকা, ছ- ১১-০৭১১), দেশীয় অস্ত্র একটি সুইচ গিয়ার চাকু এবং লাঠি জব্দ করা হয়। তবে পালিয়ে যায় এ চক্রের মূলহোতা লেগুনা রাসেল নামের এক ছিনতাইকারী সদস্য। এ ঘটনায় লেগুনার ভুক্তভোগী যাত্রী ইমন হোসেন মঙ্গলবার রাতেই বাদী হয়ে ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে রূপনগর থানায় একটি মামলা করেছেন। পুলিশ জানায়, গ্রেফতাররা মধ্যরাত থেকে ঢাকা জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লেগুনায় ভাড়ায় যাত্রী উঠান, পরে সুযোগ বুঝে লুটে নেন সবকিছু। লেগুনায় যাত্রী ওঠার পর নির্জন স্থান দেখে দেশি ধারালো অস্ত্র ও লাঠির ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী যাত্রীর টাকা-পয়সা সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। কেউ টাকা দিতে রাজি না হলে, চাপাতি ও ছুরি দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন। শুধু তাই নয়, অনেক সময় ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণও যায় পথচারীদের। এ চক্রের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই ছাড়াও নানা অপরাধে জড়িত। তারা দিনে-দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল টান দিয়েও নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা পৃথক দলে ভাগ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করছে। বিশেষ করে রাতের বেলা চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নিতো সবকিছু। দিনের বেলা সাধারণ বেশে ঘুরে বেড়ায়, আর রাতের বেলা নামে ছিনতাইয়ের কাজে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে ফের এ ছিনতাইয়ের কাজে জড়িয়ে পড়েন তারা। এছাড়া ছিনতাইয়ের কাজের জন্য মাসিক ভিত্তিতে লেগুনাও ভাড়া করে ছিনতাই করতো তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপনগর থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব আসামিদের ধরার জন্য প্রতিনিয়ত আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার নির্জন স্থানে টহল পুলিশ বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের প্রতিটি টিম এসব ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের ধরার জন্য কাজ করছে। SHARES জাতীয় বিষয়: অন্ধকারছিনতাইদুর্ধর্ষ