কেন ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে কিশোররা?

প্রকাশিত: ২:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

২১ এপ্রিল রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকায় চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ১২ বছরের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। দুই দিন আগে ১৯ এপ্রিল রাজধানীর মিরপুরে ১১ বছরের এক শিশুকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তিন কিশোরের বিরুদ্ধে, যাদের সবার বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর। অভিযুক্ত তিন কিশোরকেই গ্রেফতার করা হলে তারা আদালতে দায় স্বীকার করে। পরে আদালত তাদের পাঠায় কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে (সংশোধনাগার)।

সম্প্রতি শিশু ধর্ষণের বেশ কয়েকটি মামলায় দেখা যায়, অভিযুক্তদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। যে কিশোরদের মাঠে খেলাধুলা করার কথা, যাদের হাতে থাকবে বই-পুস্তক, যারা স্কুল কলেজে হৈ-হুল্লোরে মেতে থাকবে, তারা কেন ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে‌?বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতা কিশোরদের এ ধরনের অপরাধে জড়ানো প্রধান কারণ। তবে কোনও অপরাধের পেছনে শুধু একটি কারণ দায়ী থাকবে তা নয়। একের অধিক কারণও থাকতে পারে এবং সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এ বছরের গত তিন মাসের (জানুয়ারি থেকে মার্চ) তথ্য বলছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৮ বছরের নিচে অন্তত ৫০টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ছয় জন। আর ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দুই জনকে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে একজন। এছাড়াও ১০টি শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

২০২২ সালে প্রকাশিত মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও বেসরকারি সংস্থা ইনসিডিন বাংলাদেশ ‘বাংলাদেশে শিশুর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি জরিপ প্রকাশ করে। ঢাকাসহ মোট ১১টি জেলায় ৫ হাজার ৭৪টি শিশুর ওপর ২০২০ সালের জুন থেকে মে ২০২১ পর্যন্ত জরিপ চালানো হয়। জরিপে বলা হয়, ৫৫ শতাংশ শিশু পরিবারের ভেতরেই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। জরিপে উঠে আসে, শতকরা ৩৪টি শিশু বিভিন্নভাবে পর্নোগ্রাফি দেখেছে। এর চেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে শতকরা ৭৫ দশমিক ১টি শিশু মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি দেখছে।