রূপনগর খাল রক্ষা করা যাবে?

প্রকাশিত: ১:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৪

স্থানীয়দের বর্ণনায়, একসময় আয়তন ও দৈর্ঘ্যে বেশ বড় ছিল রাজধানীর মিরপুরের পশ্চিম অংশে অবস্থিত রূপনগর খাল। নৌকা চলতো নিয়মিত। খাল দিয়ে মানুষ তুরাগ নদী পর্যন্ত যেত। তবে কালে কালে দখলে আর দূষণে খালটি সংকীর্ণ হতে হতে বিলীন হওয়ার পথে।

খালের বিভিন্ন অংশ সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ভরাট করে দখল হয়ে গেছে। এ ছাড়া ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হতে হতে খালটি নালায় পরিণত হয়েছে। রূপনগর আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে যাওয়া এই খাল এখন বিলীন হওয়ার পথে।

তবে আশার কথা হলো, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম খালটি পুনরুদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রূপনগর খাল দিয়ে আবারও নৌকা চলাচল করবে। খালের পাশে বড় ফুটপাতসহ রাস্তা নির্মাণ হবে। খালের পাশে মানুষের বসারও ব্যবস্থা রাখা হবে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মিরপুরের এই খাল মিরপুর কমার্স কলেজ-সংলগ্ন হাজি রোড থেকে শুরু হয়ে দ্বিগুণ চওড়া হয়ে তুরাগ নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে খালের সীমানা সড়ক থেকে বেশ দূরে সরে গেছে। অথচ একসময় মিরপুরের মধ্যে চলাচলের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই খাল। আশপাশ যখন বসত গড়ে ওঠেনি, তখনও এই খালে নৌকায় চলাচল করতো মানুষ।

রূপনগর খাল গণপূর্ত অধিদফতরের অধীনে। প্রথমে খালটির দেখভালের দায়িত্ব ওয়াসাকে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতি বছরের জরিপে খালের আকার কমতে থাকে। ওয়াসার দাবি, খালের সীমানা নির্ধারণ করে না দেওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে।

পরে খালটি উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধীনে দেওয়া হয়। এরপর খালের সীমানা নির্ধারণসহ খাল উদ্ধারে নামে ডিএনসিসি। এরইমধ্যে কয়েকবার খাল পরিষ্কার করা হলেও স্থানীয় বাসাবাড়ির ময়লাসহ লেপ-তোশক, নষ্ট ফ্রিজের মতো ভারী ময়লাও এই খালে ফেলে চলেছেন স্থানীয়রা। খালের পাড় দখল করে অবৈধ বাসাবাড়ি ও দোকান বানানো হয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, রূপনগর আবাসিক এলাকার পশ্চিম পাশে ২৩ নম্বর সড়কের কালভার্টের সামনে থেকে ৭ নম্বর সড়ক পর্যন্ত খালটি কংক্রিটের দেয়াল তুলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধের পাশেই মাটি ফেলে ৪০ ফুট রাস্তা বানানো হচ্ছে। যদিও এই রাস্তা বানানোর উদ্যোগ ২০১৭ সালেই নিয়েছিল ডিএনসিসি। তখন খালটি দেখভালের দায়িত্বে ছিল ঢাকা ওয়াসা। এই নির্মাণ নিয়ে সে সময় খোদ ওয়াসা থেকে আপত্তি জানিয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে খালের দায়িত্ব ডিএনসিসি পেলে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির বিরুদ্ধে রূপনগর খাল দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ তোলে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এ নিয়ে একটি মামলাও হয়েছে।