‘মানুষের উৎপাতে’ পাখি নেই টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রকাশিত: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫ বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওরে ঝোপঝাড়, জংলা, খাল-বিল শীতকালে মুখরিত থাকত অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে। শীতকালে পাখির অভয়াশ্রম খ্যাত বেরবেরিয়া ও লেচুয়ামারা জলাশয় ও কান্দায় বসত পাখির মেলা। হাওরের জলে পাখির মিছিল তন্ময় হয়ে দেখতেন পর্যটকরা। কিন্তু হাওরের চিরচেনা সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। এখানে ক্রমেই কমছে অতিথি পাখির মিছিল। তাই পাখিপ্রেমী পর্যটকরাও ফিরছেন হতাশ হয়ে। স্থানীয়দের ভাষ্য, ফাঁদ পেতে পাখি শিকার, পর্যটকদের উৎপাত, অবাধে সংরক্ষিত এলাকায় শ্যালো মেশিন চালানো, বনায়ন কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে টাঙ্গুয়ার হাওরে অতিথি পাখিও কমে গেছে। ১৫ জানুয়ারির পর হাওরে অতিথি পাখির সমাবেশ ঘটবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানালেও কাঙ্খিত পাখি আসেনি। বরাবরের মতো পাখি গণনা করতে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব ও দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার-আইইউসিএনের একটি দল আসার কথা রয়েছে। তারা ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী টাঙ্গুয়ার হাওরে পাখি গণনা করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের গ্রাম মুসিলমপুরের কৃষক আব্দুর রহমান বলছিলেন, “কয়েক বছর আগেও প্রচুর পাখি আসত। পাখির শব্দে এই সময় রাতে ঘুমাতে পারতাম না। কিন্তু এখন আগের চেয়ে অর্ধেক পাখিও দেখি না। পাখির আনাগোনা কমে গেছে।” পর্যটকদের উৎপাত, বনজঙ্গল কমে যাওয়া এবং শিকারীদের উৎপাতের কারণে এ বছর পাখি কম আসছে বলে তার ভাষ্য। আব্দুর রহমান বলেন, “হাওর পাড়ের কিছু গ্রামে এক শ্রেণির পেশাদার পাখি শিকারি রয়েছে। তারা বিভিন্ন ফাঁদযন্ত্র দিয়ে পাখি শিকার করে। হাওরের কান্দাশ্রেণির জমিতে শিকারীরা রাতে পাখি আশ্রয় নেওয়ার আগে কারেন্টের জাল ও সুতা পেঁচিয়ে ফাঁদ পেতে রাখে। বিভিন্ন সময়ে শহর থেকেও পাইকাররা এসে খাঁচা ভরে পাখি কিনে নিয়ে যায়। স্থানীয় খাবার হোটেলগুলোতেও পাখির মাংসের বেশ কদর রয়েছে।” মেঘালয়ের পাদদেশে তাহিরপুর, মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত টাঙ্গুয়ার হাওর ‘রামসার সাইট’ হিসেবে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। শুধু অতিথি পাখির জন্য নয়, বর্ষাকালেও দেশের পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য এখন সুনামগঞ্জের এ হাওর। দুই দশক আগে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘিরে পর্যটন শুরু হলেও তা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে গত কয়েক বছর ধরে। বিস্তৃত জলরাশির এই হাওরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য জলে ভাসানো হয়েছে শতাধিক দৃষ্টিনন্দন হাউস বোট। SHARES জাতীয় বিষয়: কিচিরমিচিরেমুখরিতশীতকালে