কবি আদিলের উদ্যোগে গড়ে উঠছে ‘ফকিরবাড়ি পল্লী জাদুঘর’ প্রকাশিত: ১২:০৪ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৫ বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক বৃহৎ অংশ লুকিয়ে আছে গ্রামবাংলার প্রাত্যহিক জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উপাদানে। আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার স্বপ্ন দেখেছেন এক কবি। এ কারণে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলছেন ‘ফকিরবাড়ি পল্লী জাদুঘর’। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার এক নিভৃত পল্লি এনায়েতপুরে গড়ে উঠেছে সেই জাদুঘর। আর এর নেপথ্য কারিগর হচ্ছেন কবি ও সংস্কৃতিকর্মী আদিল ফকির। শুরুটা ২০০৪ সাল থেকে। ওই সময়ে নিজের বাড়ির একটি কক্ষে আদিল ফকির সংরক্ষণ করতে শুরু করেন তার দেখা পুরনো উপকরণ। শুরুটা হয়েছিল দাদার রেখে যাওয়া কিছু জিনিস থেকে। তারপর ধীরে ধীরে আশপাশের গ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছেন পয়সা, কৃষি উপকরণ, কুপির বাতি, লণ্ঠন, পুরাতন থালা-বাটি, হাতচালিত সরঞ্জামসহ প্রায় ১৫০টিরও বেশি গ্রামীণ উপাদান। এগুলো শুধু জিনিসপত্র নয়, বরং প্রতিটি জিনিসেই লুকিয়ে আছে একেকটা সময়, একেকটা ইতিহাস। বর্তমানে জাদুঘরটিতে রয়েছে এক পয়সা, দুই পয়সা, পাঁচ পয়সা থেকে শুরু করে কেরোসিন হারিকেন, কাঠের ধান ভাঙার যন্ত্র, পিতলের গয়না রাখার বাক্স, দেশীয় মুদ্রা, পুরনো চিঠিপত্র, কৃষি ও গৃহস্থালির নানা উপকরণ। গ্রামের সাধারণ জীবনযাত্রার প্রতিটি অংশ যেন এখানে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। জানতে চাইলে আদিল ফকির বলেন, ‘এটা শুধু জাদুঘর নয়, বরং একটি জীবনচর্চার পাঠশালা। যেখানে মানুষ হারিয়ে যাওয়া পল্লী সমাজের ইতিহাস চোখের সামনে দেখতে পারে।’ তার মতে, প্রথাগত শিক্ষা পদ্ধতিতে গ্রামীণ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা খুবই কম হয়। অথচ এই অতীতকে জানা ছাড়া জাতি হিসেবে সামনে এগোনো সম্ভব নয়। আদিল ফকিরের ভাষায়, ‘আমরা যখন পুরনো হারিকেন দেখি, তখন সেটা কেবল একটি বাতি নয়, বরং একটা সময়ের প্রতীক। এখনকার প্রজন্ম জানেই না, কীভাবে আগে আলো জ্বালানো হতো বা কীভাবে ধান ভাঙা হতো ঘরের উঠানে।’ SHARES জাতীয় বিষয়: উপাদানেপ্রযুক্তির