বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচন এলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায়।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৯২ শতাংশ মানুষ মুসলমান। আমরা মদিনার ইসলামকে বিশ্বাস করি, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ইসলামকে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমরা মওদুদীর ইসলামে বিশ্বাস করি না। যারা ফিতনা সৃষ্টি করে বিভাজন তৈরি করতে চায়, তাদের থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে কাসেমী পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘আজমতে সাহাবা’ মহা সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘হাসিনার সরকার ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিদ্বেষী ছিল। তারা আলেমদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। আল্লাহর হুকুমে কীভাবে তাদের রাজনীতির অবসান হয়েছে, আমরা তার সাক্ষী। আমাদের উচিত এমন রাজনীতি করা, যার মাধ্যমে আওয়ামী অপরাজনীতি বিলুপ্ত হবে। বাংলাদেশে আমরা আদর্শিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করব।’ তিনি আরোও বলেন, যারা দ্বীনকে আগে এবং দুনিয়াকে পরে মনে করেন। তারাই ইসলামের প্রকৃত অনুসারী। যারা ইসলামকে ব্যবহার করে রাজনীতিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। রাজনৈতিক কারণে কেউ বক্তব্য দিতেই পারে, সেটাকে স্বাগত জানাই—তবে কেউ যেন আমাদের দ্বিনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ আহ্বান জানান, আওয়ামী লীগের এই অপরাধনীতি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো রাজনীতি করতে হবে। মানুষের জন্য রাজনীতি করতে হবে, ইসলামের পক্ষে রাজনীতি করতে হবে। সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, দেশ ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের পরাজিত শক্তিরা আবারও সক্রিয় হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বলেন, যারা নবীর সাহাবাদের নাম নিয়ে বেভিচারী বলেন, যারা পূজা-রোজা এক বলে, তাদের ভোট দেওয়া জায়েজ না। ঈমান ও ইসলাম রক্ষায় তাদের বিরোধিতা করতে হবে। যার আকিদা সহীহ, যারা শার্ট-প্যান্ট পড়েও সঠিক বিশ্বাসে অবিচল, তাদের ভোট দেওয়া যাবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মহাসম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, আওলাদে রাসূল আল্লামা সাইদ আল হোসাইনী (পানিস্তান), আল্লামা খলিল আহমাদ কুরাইশী (হাটহাজারী), আল্লামা শায়খ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আবু তাহের নদভী (পটিয়া), আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী (পীর সাহেব জৈনপুরী), মুফতি জসিমুদ্দীন হাটহাজারী, আল্লামা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মুফতি মুবারকুল্লাহ প্রমুখ।