গাঁজায় মিটবে ডলার সংকট— আশাবাদ পাকিস্তানের

প্রকাশিত: ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

শিল্পে ব্যবহারের জন্য ২০২০ সালে গাঁজা বৈধ করেছিল পাকিস্তান। চার বছর পর দেশটি গাঁজা ব্যবসার জন্য একটি আইনি কাঠামো তৈরি করতে যাচ্ছে। ধুকতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে গাঁজার ক্রমবর্ধমান বাজারকে পুঁজি করার চেষ্টা করছে দেশটি।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে শিল্প ব্যবহারের জন্য গাঁজা অনুমোদন করেছিল পাকিস্তান সরকার। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে এ বিষয়ে কোনো  নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি দেশটি। গত ফেব্রুয়ারিতে গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য একটি আদেশ দেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি।

পাকিস্তানের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বিনিয়োগ আকর্ষণ প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়ে থাকে দেশটির স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিল। এই কাউন্সিলের একজন কর্মকর্তা নিক্কেই এশিয়াকে গাঁজা নীতিমালা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এই উদ্যোগের বিষয়ে খুব আন্তরিক। একটি নীতিমালা তৈরির কাজ খুব দ্রুত গতিতে চলছে।

এই কর্মকর্তা জানান, পাকিস্তানে নতুন জোট সরকার গঠন হয়েছে। সরকার নীতিমালা প্রণয়নের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করছে। নীতিমালায় থাকবে কৃষক ও বিক্রেতাদের লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা এবং চাষের জন্য অঞ্চল নির্ধারণের মতো বিষয়।

গাঁজার বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের জন্য গাঁজা উৎপাদনের অনুকূল আবহাওয়ার সদ্ব্যবহারের ব্যাপারে আশাবাদী পাকিস্তান। ভারতীয় গবেষণা সংস্থা মার্কেটসেন্ডমার্কেটসের মতে, ২০২২ সালে গাঁজার বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল ২৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। বাজারটি এত দ্রুত বাড়ছে যে, ২০২৭ সালে আকার হবে ৮২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। পাকিস্তান এই বিশাল বাজারে রফতানি ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপায় খুঁজছে। গাঁজা রফতানি ও রাজস্ব থেকে আয় দিয়ে পাকিস্তান বৈদেশিক মুদ্রা সংকট কাটিয়ে উঠার ব্যাপারে ভাবছে। বর্তমানে দেশটিকে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বেলআউট ও বৈদেশিক ঋণের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে আফগান সীমান্তের কাছাকাছি বুনো অঞ্চলে ব্যাপক গাঁজা চাষ হয়। সেখানে খোলামেলা বিক্রি হয় গাঁজা। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত স্থানীয় গাঁজার দোকানগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া-উল-হক ১৯৮০ দশকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের মাদকের বিরুদ্ধে বিশ্বযুদ্ধের সময় গাঁজা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।

গাঁজায় পাওয়া যায় টেট্রাহাইড্রোকানাবিনল (টিএইচসি) এবং ক্যানাবিডিওল (সিবিডি)। এই যৌগগুলো দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা যেমন ফাইব্রোমায়ালজিয়া এবং মৃগী রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নতুন আইনের কারণে চিকিৎসায় গাঁজা ব্যবহারের পথ প্রশস্ত হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে গাঁজার আঁশ দড়ি, কাপড়, কাগজ এবং নির্মাণ সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।