বাম জোটের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা প্রকাশিত: ৫:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৪ ‘দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, খেলাপি ঋণ, ব্যাংক ডাকাতি রোধ, দুর্নীতিবাজদের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং দুর্নীতিবাজ, ঋণ খেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের গ্রেফতারের’ দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরা করতে কর্মসূচি করে বাম বামগণতান্ত্রিক জোট। তবে পল্টন মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে থেমে যায় তাদের কর্মসূচি। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সমাবেশ শেষে জোটের নেতারা মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে যেতে চাইলে পল্টন মোড়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় ব্যারিকেড ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে পুলিশের অনুরোধে পল্টন মোড়েই অবস্থান নেন জোটের নেতারা। পল্টন মোড়ে জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘সরকারি দলের নেতারা বলেন, সরকার নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। বেনজীর সাহেব যখন পুলিশ প্রধান এবং র্যাবের আইজিপি ছিলেন তখন তিনি অবৈধভাবে সাতটি বেসামরিক পাসপোর্ট করেছেন। তার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের নমুনা দেখা গেছে!’ তিনি বলেন, ‘সরকারি দল ও বিভিন্ন সংস্থা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের প্রত্যক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। দুদক যখন বেনজীরের বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছিল, তখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, চূড়ান্ত প্রমাণ পাওয়ার আগে কিছু বলা যাবে না। এটা প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহ দেওয়ার সামিল।’ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে জোটের সমন্বয়ক বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের নামে মামলা-গ্রেফতার হওয়ার আগেই ব্যাংকের সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। মতিউরও নাকি মাথা টাক করে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী করে?’ তিনি বলেন, ‘আজকের দুর্নীতিবাজরা মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আবার এই দুর্নীতিবাজদের পক্ষে বিবৃতি দেয়। দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। এই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে, শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করতে হবে।’ তিনি জানান, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও বিচার, অর্থপাচার রোধ, খেলাপি ঋণ উদ্ধারসহ নানা বিষয়ে জোটের ধারাবাহিক আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামী ১৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একই দাবিতে আজ সারা দেশে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন জোটের নেতাকর্মীরা। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন মহানগরে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় এবং জেলায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। মিছিলে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে রমনা জোনের শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর সরদার বুলবুল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা ও কর্ম দিবসে আজ ব্যস্ত সড়ক। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা নেতাদের অনুরোধ করেছি, নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে। তখন তারা আমাদের অনুরোধ রেখে পল্টন মোড়ে তাদের সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। তারা চেষ্টা করেছিল, ব্যারিকেড ছেড়ে চলে যাওয়ার। পরে তাদের সিনিয়র নেতারা আমাদের অনুরোধ রেখে সেখানেই তাদের প্রোগ্রাম স্থগিত করে। আমাদের মূল বিষয়টা বাধা দেয়া না, আমরা সমন্বয় সাধন করেছি নেতাদের সঙ্গে। আমরা তাদের শুধু একটি ব্যারিকেড দিয়ে পল্টন মোড়ে থামিয়ে দিয়েছি। এখানে হাতাহাতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’ সমাবেশে আরও বক্তব্য– রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহিন রহমান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ। SHARES জাতীয় বিষয়: ডাকাতিদুর্নীতিবাজসম্পদ