ফুলগাজী-পরশুরামে বন্যা, মৎস্যখাতে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৪

ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে ভেসে যায় পুকুর ও ঘেরের মাছ। বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠে।

জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যায় মাছ চাষিদের রেণু, বড় মাছ ও পুকুরের অবকাঠামো মিলে অন্তত ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেড় হাজারের বেশি খামারি। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে দুই উপজেলার একক ও যৌথ মালিকানাধীন প্রায় ৩২৫টি পুকুর। এসব পুকুর থেকে ৫৭ লাখ টাকার বড় মাছ এবং ৩৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। এছাড়া দুই উপজেলায় খামারিদের প্রায় ২২ লাখ টাকার অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

একই সূত্রে জানা যায়, পরশুরাম উপজেলায় ৮০টি পুকুর ভেসে ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকার মাছ ও ৩০ লাখ ৭০ হাজার টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। উপজেলায় মাছ চাষিদের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। সব মিলিয়ে পরশুরামের মৎস্যখাতে প্রায় সাড়ে ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

একইভাবে ফুলগাজী উপজেলায় ২৪৫টি পুকুর ভেসে সাড়ে ৪০ লাখ টাকার মাছ ও সাড়ে ৭ লাখ টাকার মাছের পোনা ভেসে গেছে। উপজেলায় মাছ চাষিদের ২০ লাখ টাকার আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ফুলগাজীতে ৬৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করা হয়েছে।

ফুলগাজী উপজেলার মৎস্য খামারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দেয়ার আগেই পুকুরের চারপাশে নেট জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলাম। কিন্তু পানির তীব্র স্রোতে কিছুই কাজে আসেনি। সবকিছু পানিতে ভেসে গেছে।

পরশুরাম উপজেলার এলাকার মাছ চাষি আব্দুল করিম বলেন, আকস্মিক বন্যায় সবকিছু ভেসে গেছে। ক্ষতি কাটিয়ে বছর ঘুরে আসার আগেই আবার একই দশা হয়। প্রতিবার বন্যা হলে লোকসান গুণতে হয়। ফলে অনেকেই ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হলে প্রতিবছরই আমাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হবে।জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে দুই উপজেলার অন্তত ৩২৫টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে অধিকাংশ খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে তথ্য পাঠানো হয়েছে। সরকারি সব ধরনের সহযোগিতা খামারিদের প্রদান করা হবে।