ছুটছে পেঁয়াজের দর, থামবে কোথায় প্রকাশিত: ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৪ এবার মৌসুমের শুরুতেই ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা আগেভাগেই অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করায় প্রভাব পড়েছে দেশের মোট উৎপাদনে। পেঁয়াজের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে মজুতদারদের হাতে। মজুদে সঙ্কট না থাকলেও কোনোভাবেই পেঁয়াজের দরে লাগাম টানা যাচ্ছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে রান্নার এই দরকারি পণ্যটির দর খুচরায় বেড়েছে কেজিতে অন্তত ২০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে দাম আরও বাড়তে পারে। রাজধানীর শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার ও মহাখালী কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেঁয়াজের খুব একটা সংকট না থাকলেও ধাপে ধাপে চড়ছে দাম। এসব বাজারে খুচরায় ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার আশপাশে। তবে বিভিন্ন অলিগলিতে বা মুদি দোকান থেকে ক্রেতাদের এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়। কারওয়ান বাজারে পাইকারি দোকান মেসার্স মাতৃভাণ্ডারের সজীব শেখ ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৯৮ টাকা কেজি দরে, আর পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১০৪ টাকায়। তিনি সপ্তাহখানেক আগেও ৯০ টাকার নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার এখানে পেঁয়াজ চাহিদা অনুযায়ী কিছুটা শর্ট আছে।” তিনি বলেন, “ভারত থেকে এখন পেঁয়াজ খুব কম আসতেছে। ভারত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর দাম বেড়ে গেছে। এখন আমদানিকারকরা পেঁয়াজ এনে পোষাতে পারে না। শুল্ক না বাড়ালে আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হত না। “কৃষকদের কাছে হয়ত অল্প পেঁয়াজ আছে। কিন্তু পেঁয়াজ মূলত মজুতদারদের কাছে। তাদের কাছে প্রচুর পেঁয়াজ আছে। তারা খাম্বা (স্তরে স্তরে রাখা) দিয়া বড় বড় মাচা করে সেখানে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রেখেছে। এখন ভোক্তা অধিদপ্তর এসব জায়গায় রেইড দিলে সব ঠিক হইয়া যাইব।” মহাখালী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা নির্মল ঘোষ বলেন, “আমার পেঁয়াজ আগের কেনা, তাই দামটা কম। সপ্তাহখানেক আগে কিনছি। এখন অনেক জায়গায় শুনতেছি দাম নাকি বাড়তেছে। এখন পেঁয়াজের সিজন নাই, তাই মজুতদাররা দাম বাড়াচ্ছে।” আরেক বিক্রেতা মো. বাহারউদ্দীন বললেন, “দুইদিন আগে কারওয়ান বাজার থেকে কিনেছি ১০৬ টাকা করে। এই সময়ে সাধারণত এত দাম বাড়ে না, আরও কম থাকে। মৌসুমের শেষে বাড়ে।” এদিকে তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’। গুলশান-২ এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল হোসাইন ‘স্বপ্নের’ আউটলেট থেকে ১০৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি বলেন, “বেছে বেছে পেঁয়াজ কিনেছি। বাজারে দাম আরও বেশি। মূলত যে যেরকম পারতেছে লাভ করতেছে। না হয় স্বপ্ন কমে বিক্রি করে কেমনে?” মহাখালীর রসুলবাগে মার্জিয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। শাহেদ বলেন, “দেশের বাইরের মাল আসে নাই এখনও। তবে শুনছি পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢুকব। কিন্তু এগুলো ঢুকতে আরও ১৫ দিনের মতো সময় লাগব।” তবে শ্যামবাজারের পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা শেখ শাহেদ বললেন ভিন্ন কথা। তার ভাষ্য, সংকট নয় বরং ‘মুনাফালোভী’ মজুদদাররা পরিকল্পনা করে দাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, “এখন কৃষকদের হাতে খুব একটা পেঁয়াজ নেই। তাই সংরক্ষণকারীরা মাচা থেকে যে পেঁয়াজ বের করতেছে সেটা বেশিতে বিক্রি করতেছে। ভোক্তা অধিদপ্তর এমন লোকদের ধরলে পেঁয়াজের দর আবার ঠিক হয়ে যাবে।” SHARES জাতীয় বিষয়: পেঁয়াজবিক্রি