বিপন্ন ভাষা ‘খাড়িয়া’য় কথা বলতে পারেন মাত্র কয়েকজন প্রকাশিত: ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০২৫ মৌলভীবাজারের চা বাগানের বাসিন্দা ভেরোনিকা কেরকেটা ও খ্রিস্টিনা কেরকেটা- এ দুই বোন নিজেদের মধ্যে কথা বলেন তাদের মাতৃভাষা ‘খাড়িয়া’তে। অতি বিপন্ন এ ভাষাটি তারাসহ আর মাত্র জনা পনের মানুষের মুখেই টিকে আছে। তারাও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকায় ভাষাটির চর্চা বা ব্যবহার তেমন হয় না। এ অবস্থায় দ্রুত সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া না হলে এ মানুষগুলোর সঙ্গে হারিয়ে যাবে ভাষাটিও। খাড়িয়ারা বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। তাদের আদি বসতি প্রতিবেশী দেশ ভারতের ঝাড়খন্ডের রাঁচী, নাগপুর, ও অযোধ্যার পাহাড়ি এলাকায়। মূলত সিলেট অঞ্চলে চা বাগান সৃষ্টির শুরুর সময় খাড়িয়াদের চা-শ্রমিক হিসেবে নিয়ে আসে ব্রিটিশরা। তাদের বংশধরেরাই বর্তমানে সিলেট হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বসবাস করছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খাড়িয়ার বসবাস মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। খাড়িয়া নৃ-গোষ্ঠীর নেতা জহর লাল ইন্দোয়ার বলেন, “খাড়িয়া সমাজ চার ভাগে বিভক্ত। সেগুলি হচ্ছে মুন্ডা-খাড়িয়া, ঢেলকী-খাড়িয়া, দুধ-খাড়িয়া ও এড়েঙ্গা-খাড়িয়া। “এই চারটি সমাজ আবার বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত। যার মধ্যে শ্রীমঙ্গল ও তৎসংলগ্ন চা বাগানে যেসব গোত্র এখনো টিকে আছে সেগুলো হলো- ইন্দোয়ার, ডালমাড়িয়া, ধানোয়ার, ডুংডুং, কেরকেটা, বাঘোয়ার, বিলুঙ্গা, কেশোয়ার, খাটখাড়িয়া, হেঁঠেটু, টপোরিয়া, ধুরবুঙ্গিয়া, সুরুজপুড়িয়া ইত্যাদি।” খাড়িয়ারা মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বী। তাদের দেব-দেবীর মধ্যে প্রধান হচ্ছেন দুর্গা। তবে অনেকেই শীতলাদেবীর পূজা করেন। পাশাপাশি তারা বনদেবতারও পূজা করেন। তিনি বলেন, সময়ের আবর্তে খাড়িয়াদের অনেকেই খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। সনাতনী নিয়ম অনুযায়ী তাদের নিজ গোত্রে বিবাহবন্ধন নিষিদ্ধ। খাড়িয়ারা মৃতদেহ সমাহিত করে। শ্রীমঙ্গলে খাড়িয়া অধিবাসী ঠিক কতজন আছেন তার সঠিক হিসাব না থাকলেও জহর লাল ইন্দোয়ারের ধারণা, এ সংখ্যা হাজার দুয়েক হবে। তবে পুরো সিলেট বিভাগজুড়ে হয়ত চার-পাঁচ হাজার খাড়িয়া থাকতে পারে। SHARES জাতীয় বিষয়: থাকায়নিজেদের