রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে অস্ত্র বিক্রি, লাভবান যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশিত: ১২:০৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫ তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে অস্ত্র বিক্রি।আর সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র। মোট অস্ত্র বাণিজ্যে ৪৩ শতাংশই বিক্রি করে তারা, যা দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্রান্সের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউ (সিপরি) এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। সিপরির রিপোর্ট দেখলে অবাক লাগতে পারে। বিশ্বে অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ২০১০ থেকে ২০১৯-এর তুলনায় মোটের উপর একই আছে। কিন্তু একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যাবে, বিশ্বের ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাব ক্রেতাদের উপর ভয়ংকরভাবে পড়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে ইউক্রেন সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে। তারা অস্ত্র আমদানির পরিমাণ অনেকগুণ বাড়িয়েছে। তারাই এখন অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে শীর্ষে। এই চার বছরে বিশ্বজুড়ে যে অস্ত্র রপ্তানি হয়েছে, তার ৯ শতাংশ হয়েছে ইউক্রেনে। এই একই সময়ে ইউরোপের দেশগুলিতে অস্ত্র কেনার পরিমাণ বেড়েছে ১৫ শতাংশ। এটাও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সরাসরি প্রভাব। সিপরির রিপোর্ট বলছে, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার ফলেও অস্ত্র কেনাবেচার পরিমাণ বেড়ে গেছে। রিপোর্টের একজন লেখক ম্যাথু জর্জ বলেছেন, রাশিয়া আক্রমণ করতে পারে, এই ভয় থেকেই ইউরোপ বেশি করে অস্ত্র কিনছে। এর আগে যারা সবচেয়ে বেশি অস্ত্র আমদানি করতো সেই সৌদি আরব, ভারত, চীন ওই সময়ের মধ্যে অস্ত্র কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ৩৫টি দেশ ২০২০ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়েছে। তার মধ্যে ৪৫ শতাংশ অস্ত্র গেছে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে। জার্মানি ১২ শতাংশ ও পোল্যান্ড ১১ শতাংশ অস্ত্র দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন যদি ইউক্রেনকে অস্ত্র দেয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইউক্রেনের কতটা সমস্যা হবে। ২০২০ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে ইউক্রেনই হলো অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে প্রথম ১০-এ থাকা একমাত্র ইউরোপের দেশ। ইউরোপের অনেক দেশ অস্ত্র আমদানির পরিমাণ বাড়ালেও প্রথম ১০-এ নেই। দুই নম্বরে আছে ভারত। তবে ভারত অস্ত্র কেনার পরিমাণ কমিয়েছে। সিপরি আর্মস ট্রান্সফার প্রোগ্রামের সিনিয়র গবেষক পিটার ওয়েজম্যান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। ইউরোপের দেশগুলি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৫০০টি যুদ্ধবিমান ও অন্য অস্ত্র কেনার বরাত দিয়ে রেখেছে। বিশ্বে অস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে তারাই এক নম্বরে। ২০২০ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে তারা ১০৭টি দেশকে অস্ত্র দিয়েছে। মোট অস্ত্র রপ্তানির ৪৩ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে হয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফ্রান্সের তুলনায় তাদের অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ চারগুণেরও বেশি বলে জানিয়েছেন ম্যাথিউ জর্জ। ২০১৫ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে রাশিয়ার অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ ৬৩ শতাংশ কমেছে। ২০২১ ও ২০২২ সালে তারা গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম অস্ত্র বিক্রি করেছে। ওয়েজম্যান বলেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার অস্ত্র রপ্তানি অনেকটাই কমে গেছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা অন্য দেশে অস্ত্র বিক্রি করতেও পারছে না। যদি কোনো দেশের সঙ্গে তারা অস্ত্র কেনাবেচা করতে পারে, তাহলে সেটা হলো চীন ও ভারত। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: অনেকগুণঅস্ত্রমোটের