উত্তরবঙ্গে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা এবারও প্রকাশিত: ১২:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২৫ সড়কপথে ঈদযাত্রায় গাড়ির ধীরগতি ও যানজট নতুন কিছু নয়। প্রতিবছর ঈদের সময় সড়কপথে ঘরমুখো মানুষকে এ ভোগান্তি মেনে নিয়েই নীড়ে ফিরতে হয়। দেশের মহাসড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের মহাসড়কটি অন্যতম, যেখানে যাত্রীর চাপ বরাবরই বেশি থাকে। বরাবরের মতো এবারও এ পথের যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পথের যাত্রীরা বলছেন, বাইপাইল, চন্দ্রা, টাঙ্গাইল এবং যমুনা সেতু হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে ঈদে উত্তরবঙ্গের মানুষকে কখনো কখনো অতিরিক্ত ১০-১২ ঘণ্টা বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। এতে ঈদযাত্রা একেবারে মলিন হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে বাইপাইল ও চন্দ্রা মোড়ে সবচেয়ে বেশি যানজটের কবলে পড়ে সড়কপথের গাড়িগুলো। বাইপাইল থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক পার হতে গাড়িগুলোর কখনো কখনো দুই ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। পাশাপাশি গোড়াই মিলগেট, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এবং যমুনা সেতু পূর্ব গোলচত্বরেও ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে যমুনা সেতু পূর্ব গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যানজট সৃষ্টি হয়, যা যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত ভোগান্তি সৃষ্টি করে। এ ছাড়া যমুনা সেতুর পরে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২: এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেন উন্নীতকরণ প্রকল্পের নির্মাণকাজের জন্যও ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরি সূত্রে ঢাকায় বসবাস করা জসীম উদ্দীন ঈদের ছুটিতে প্রতিবারই গাইবান্ধায় যান। তিনি জানান, সাধারণ সময়ে গাবতলী থেকে গাইবান্ধা যেতে সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে কিন্তু ঈদের সময় এই ২৫০ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে অন্তত ১০ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়। তিনি আরও বলেন, এবার ঈদে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হতে পারে চন্দ্রা মোড়ে, কারণ এখানে বাসগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানজট তৈরি করে। এরপর যানজট হতে পারে বগুড়ার পর সোনাতলা, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে। এ পথে কিছু ওভারপাসের কাজ শেষ হয়নি, যা যানজট সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া দিনাজপুর লিংক রোডের ঘোড়াঘাট এলাকায় কিছু জটিলতা রয়েছে, সেখানে এক লেন রাস্তা হওয়ায় একদিকের গাড়ি ছাড়লে অন্যদিকের গাড়ি বন্ধ করে রাখতে হয়। উত্তরবঙ্গের ঝামেলা এখানে হতে পারে। প্রতিবছর ঈদের আগে যাত্রাপথের যানজট নিরসনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। সেই সভায় উপস্থিত থাকেন সড়কপথ নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তাসহ সব অংশীজন। আলোচনা হয় সমস্যা সমাধানের বিষয়ে। তারপরও সড়কের যানজট ও ভোগান্তি থামে না। এবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সারা দেশে যানজট হতে পারে এমন ১৫৯টি গুরুত্বপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করার কথা জানানো হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্পট ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে– ৫৪টি। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ৪৯টি, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৪২টি, ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে ৮টি এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৫৪টি স্পটের মধ্যে রয়েছে– বাইপাইল মোড়, চন্দ্রা মোড়, গোড়াই মিলগেট, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে যমুনা সেতু পূর্ব গোলচত্বর, যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর, ফেন্সিগেটের আগের অংশ, ফেন্সিগেট সার্ভিস লেন, মুলিবাড়ী আন্ডারপাসের আগে, কড্ডা ফ্লাইওভারের পশ্চিমে, কোনাবাড়ী আন্ডারপাসের আগে, হাটিকুমরুল পাঁচলিয়া বাসস্ট্যান্ড, হাটিকুমরুল ধোপাকান্দি ব্রিজ, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, হাটিকুমরুল বাজার, ঘুরকা বেলতলা, ভূঁইয়াগাতী বাসস্ট্যান্ড, হোটেল হাইওয়ে অভিভিলা, ষোলমাইল, সিরাজগঞ্জ বাইপাস, জমজম দইঘর, বগুড়া বাজার থেকে সীমাবাড়ী কলেজ, পেন্টাগন হোটেল, ফুড ভিলেজ হোটেল, হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদ, দাদপুর জামাই রোড, নিউ পাপিয়া হোটেল থেকে চাচা ভাতিজা হোটেল, জোড়া ব্রিজ, চান্দাইকোনা গরুর হাট পর্যন্ত। এ ছাড়া ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কাচিকাটা টোলপ্লাজা, বনপাড়া বাইপাস, বনপাড়া বাজার, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের বানেশ্বর বাজার, রাজশাহী, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা বটতলা থেকে মোনায়েম কন্সট্রাকশন, ছনকা বাজার, শেরপুর মডেল মসজিদের সামনে, নয়ামাইল বাজার, মাঝিরা বাজার, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানার বনানী বাসস্ট্যান্ড, শাকপালা, বগুড়া জেলার সদর থানার জিয়া মেডিকেল কলেজ গেটের সামনে, তিন মাথা রেল ক্রসিং, চার মাথা ফ্লাইওভার ব্রিজের নিচে, বারোপুর বাসস্ট্যান্ড, মাটিডালি বিমান বন্দর মোড়, টিএমএসএসের সামনে, শিবগঞ্জ থানার মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মায়ামনি চৌরাস্তা মোড় থেকে গোবিন্দগঞ্জ ব্র্যাক অফিস, গাইবান্ধা, পলাশবাড়ী উপজেলা পোস্ট অফিস এবং শিল্পী রেস্তোরাঁ থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর পর্যন্ত পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা, পীরগঞ্জ উপজেলা বাস স্টপেজ থেকে সাসেক প্রকল্পের নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত, বিশ মাইল, পীরগঞ্জ, রংপুর, বড় দরগাহ্ আন্ডারপাস, পীরগঞ্জ, রংপুর, শঠিবাড়ী আন্ডারপাস, শঠিবাড়ী বাজার এবং বাস স্টপেজ এলাকা, মিঠাপুকুর, রংপুরকে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের যানজটের গুরুত্বপূর্ণ হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সভায় যানজট নিরসনে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ), সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও হাইওয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। SHARES জাতীয় বিষয়: গাড়িগুলোসড়কপথের