টানা ঢালাও দরপতনে নাকাল শেয়ারবাজার

প্রকাশিত: ৫:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
একের পর এক ঢালাও দরপতন হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজারে। এমন দরপতনের মধ্যে পড়ে নাকাল হয়ে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। আর প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে আগে থেকেই বড় লোকসানের মধ্যে থাকা বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা আরও ভারী হচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা।

বিনিয়োগকরা পুঁজি হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বিক্ষুব্ধও হয়ে উঠছেন। দরপতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন তারা। বিক্ষোভ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। তবে এতেও বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

গত কয়েক কার্যদিবসের মতো সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিরেটর দাম কমেছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে টানা ৯ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো। যার মধ্যে ৮ কার্যদিবসেই ঢালাও দরপতন হয়েছে।

শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতন দেখা দেওয়ায় গতকাল বুধবার মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে বিএসইসির চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। একই সঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যানের পতদ্যাগ দাবি করেন বিনিয়োগকারীরা।

এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে আধাঘণ্টার মধ্যে দাম কমার তালিকা বড় হয়ে যায়। লেনদেনের শেষদিকে দরপতনের মাত্রা আরও বাড়ে। ফলে ঢালাও দরপতনের সঙ্গে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলে ডিএসইতে ৫২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০০টির। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৫টির শেয়ার দাম বেড়েছে এবং ১৬১টির দাম কমেছে। আর ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৭২টির দাম কমেছে এবং ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এছাড়া বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৭টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর ১টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২৪টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সার্বিকভাবে দাম কামার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১০৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়েগঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।