উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা সত্ত্বেও পশ্চিম সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

প্রকাশিত: ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, মে ৩১, ২০২৫

পশ্চিম সিরিয়ায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম শুক্রবার (৩০ মে) গভীর রাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় উপকূলীয় শহর লাতাকিয়ায় একজন নিহত এবং আরও তিনজন আহত হয়েছে। হামলার ঘটনা স্বীকার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, প্রায় এক মাসের মধ্যে এটি দেশটির ওপর প্রথম বিমান হামলা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা সানা এর আগে জানিয়েছিল, লাতাকিয়া ও তারতুস প্রদেশের গ্রামীণ অঞ্চলের তিনটি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের তারতুস ও লাতাকিয়ার আশেপাশের সামরিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান।

এই হামলার আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়া ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনে পরোক্ষ সংলাপ হওয়ার কথা স্বীকার করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের দামেস্ক দূত বলেছেন, প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সংঘাত ‘সমাধানযোগ্য’।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, ‘লাতাকিয়া অঞ্চলে আন্তর্জাতিক ও ইসরায়েলি সামুদ্রিক চলাচলের স্বাধীনতার জন্য হুমকি তৈরি করা উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগারে হামলা চালানো হয়েছে।’

সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, ‘লাতাকিয়ার এলাকায় ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। তারা এই অঞ্চলে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দিয়েছে যাতে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা না আসে এবং ইসরায়েল ও তার নাগরিকদের জন্য যেকোনও হুমকি অপসারণ করা যায়।’

এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া বিষয়ক দূত থমাস বারাকের দামেস্ক সফরের ঠিক একদিন পর ঘটল। ওই সফরে তিনি সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে আলোচনা করেন। বলেন, ইসরায়েল-সিরিয়া সংঘাত ‘সমাধানযোগ্য’ এবং এর সূচনা হওয়া উচিত ‘সংলাপ’ দিয়ে।

১৯৪৮ সালের প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে দুটি দেশ প্রযুক্তিগতভাবে যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা তীব্রতর হয় এবং ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান হাইটস দখল করে।

বাশার আল-আসাদের শাসনামলেও এবং তার পতনের পরও ইসরায়েল সিরিয়ায় হামলা অব্যাহত রেখেছে।

আসাদ সরকারের পতনের ঠিক আগে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে আরও কিছু সিরীয় অঞ্চল দখল করে নেয়।

মে মাসের শুরুতে সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আল-শারার মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে ট্রাম্প আল-শারাকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানান।

যদিও আল-শারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তিনি ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তে ফিরে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।