শেখ হাসিনা, তারিক সিদ্দিকসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে

প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৫

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। বুধবার বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আগামী ২২ অক্টোবর আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষে চার্জ আমলে নেওয়ার শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তৎকালীন হাসিনা সরকারের সময় টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেল (টিএফআই) এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটক রেখে গুম করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গুমের একটি মামলায় শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অপর মামলায় একই দুইজনসহ আরও ১৩ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিরোধী মতের ব্যক্তিদের গুম করা হতো। ফ্যাসিস্ট শাসনকে সুসংহত করা ও বিরোধী পক্ষকে দমন করাই ছিলো শেখ হাসিনার প্রধান লক্ষ্য।” এ সময় শুনানিতে গুমের শিকার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও জানান, অন্তত ছয়টি সংস্থা তিন ধাপে গত ১৬ বছর ধরে গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে। ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে গুম কমিশনের রিপোর্টও সংযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে সরকারের একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ আছে। এসব বাহিনীর মধ্যে রয়েছে ডিজিএফআই ও র‍্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট, যাদের কয়েকজন সদস্য এখনও সক্রিয়ভাবে কর্মরত।

শুনানি শেষে গুমের শিকার ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের সামনে তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন এবং ট্রাইব্যুনালের কাছে ন্যায়বিচারের আবেদন জানান।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন।