ইবরাহিম আ.-কে আল্লাহ যেসব পরীক্ষা করেছিলেন

প্রকাশিত: ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২৪

হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে বলা হয় মুসলিম জাতির পিতা। তিনি ছিলেন হজরত নূহ আলাইহিস সালামের সম্ভবত: এগারোতম অধঃস্তন পুরুষ। নূহ থেকে ইবরাহীম পর্যন্ত প্রায় ২০০০ বছরের ব্যবধান ছিল। হজরত সালেহ আলাইহিস সালামের প্রায় ২০০ বছর পরে ইবরাহিম আলাইহিস সালামের আগমন ঘটে। 

ইবরাহিম আলাইহিস সালামের পরবর্তী সকল নবী তার বংশধর ছিলেন। তার ছেলে ইসহাক আলাইহিস সালাম থেকে বনী ইসরাঈলের সূচনা। ইসহাক আ.-এর পুত্র ইয়াকুব আ. থেকে বনী ইসরাঈলের বিস্তার ঘটে।

অপর দিকে হজরত ইবরাহিম আ.-এর আরেক ছেলে ইসামাঈল আ.-এর বংশে জন্ম নিয়েছেন সাইয়্যিদুনা হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। যাকে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে আগমনকারী সকল মানুষের হেদায়েতের জন্য নির্বাচন করেছেন এবং তাকে খাতামুন্নাবীয়্যিন বা সর্বশেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করেছেন।ইবরাহিম আ.-কে আল্লাহ তায়ালা বেশ কিছু পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি প্রত্যেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং আল্লাহ তায়ালার খলিল বা খলিলুল্লাহ উপাধি পেয়েছেন।

ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তায়ালা নবী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তবে তার জীবনের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল শৈশব বা বেড়ে ওঠার সময়কাল থেকেই। তিনি যেই পরিবেশে বড় হয়েছিলেন, সেখানে সবাই ছিল আল্লাহ বিমুখ। আল্লাহর নাফরমানী ও মূর্তিপূজাই ছিল তাদের মূল ইবাদত।

কিন্তু নবী ইবরাহিম আলাইহিস সালাম শৈশব থেকেই এসব থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন। মানুষের নিজ হাতে তৈরি মূর্তিপূজা নিয়ে তার মনে শৈশবেই প্রশ্ন জেগেছিল। তিনি ভাবতেন, এ-আবার কেমন রব, যে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। যাকে অন্যরা তৈরি করেছে কাদা-মাটি থেকে। সে নিজেকে মশা-মাছি থেকে রক্ষা করতে পারে না!

তিনি রাতের বেলা চাঁদের আলো দেখে ভাবতেন, এই বুঝি আমাদের রব, এর রশ্মি পুরো পৃথিবীকে আলোকিত করেছে। সকালে চাঁদ অস্ত গিয়ে সূর্য উঠার পর তিনি ভাবতেন, সূর্যই হয়তো বিশ্বজগতের রব। সূর্যের আলো চাঁদের থেকেও উজ্জ্বল। কিন্তু সন্ধ্যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার পর তার ভাবনা পরিবর্তন হতো। তিনি ভাবতেন, এই সূর্যও আমাদের রব হওয়ার ক্ষমতা রাখে না। সে নিজেও তো অস্ত যায়! নিশ্চয় এমন কেউ আছেন যিনি এই পুরো জগতকে পরিচালনা করছেন এবং সবকিছু তার আদেশ মেনে চলছে।

এভাবেই একটি খোদাবিরোধী পরিবেশে বেড়ে উঠেও আল্লাহ তায়ালার পরিচয় খুঁজে পেয়েছিলেন হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম।