বাবা ডাক শুনার পরও তারা ছাত্রদল নেতা

প্রকাশিত: ৫:৪৯ অপরাহ্ণ, মে ৭, ২০২৪

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মিত ছাত্র এবং অবিবাহিতরাই ছাত্রদল করার এবং পক্ষে থেকে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও প্রতি দুই বছর পর পর নতুন কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও প্রায় অর্ধ যুগ পরে এখনও নতুন কমিটি পায়নি ফেনী জেলা ছাত্রদল। ৩৯৭ সদস্য বিশিষ্ট বিশাল এই জেলা কমিটিতে অধিকাংশই সক্রিয় নয় অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন প্রবাসে। অনেকেরই আবার বিয়ে করে ছেলে সন্তান মুখ থেকে ‘বাবা বাবা’ ডাক শুনছেন। অথচ তারা এখনো জেলা ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ ধরে রেখেছেন।

এনিয়ে চরম ক্ষোভ ও অনীহা প্রকাশ করেছেন জেলা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।পাশাপাশি অনেকেই কমিটির পদের আশায় করতে পারছেন না বিয়ে।

সংগঠন সূত্র মোতাবেক জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই সর্বশেষ ফেনী জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ২২ অক্টোবর জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান অনুমোদিত ওই কমিটিতে সালাহউদ্দিন মামুনকে সভাপতি ও মোরশেদ আলম মিলনকে সাধারণ সম্পাদক

নির্বাচিত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন ২০০২ সালে ও সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন ২০০০ সালে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে সভাপতি সালা উদ্দিন মামুন’র ১ছেলে ১মেয়ে।সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম

মিলন ১ মেয়ে। সিনিয়র সহ সভাপতিফরহাদ উদ্দিন চৌধুরী মিল্লাত ১মেয়ের অধিকারী। প্রতিদিন সকাল হতে সন্ধ্যা বাবা ডাক শুনার পর তবুও তারা ছাত্রদলের অভিভাবক।

মোরশেদ ছাড়াও শীর্ষ ৫ সূত্র আরো জানায় সহ- সভাপতি নিজাম উদ্দিন সোহাগ বর্তমানে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব, নাসির উদ্দিন মানিক পৌর যুবদলের কার্যনির্বাহী সদস্য, আবুল খায়ের লিটন পরশুরাম উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক, আবু জাফর চৌধুরী ও রেজাউল করিম চৌধুরী লাকী ছাগলনাইয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক, আব্বাস পাটোয়ারী সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহবায়ক।

নাসির উদ্দিন মানিক, মঈনুল হোসেন জ্যাকসন, ওসমান গনি মাহফুজ, বাপ্পা খোন্দকার, যুগ্ম-সম্পাদক মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, আলমগীর হোসেন, আলাউদ্দিন রুমন, কফিল উদ্দিন পাটোয়ারী, গোলাম মোর্শেদ শুভ, আকরাম হোসেন চৌধুরী রাসেল বিবাহিত।

২০০ নিষ্ক্রিয় কমিটির পদ পদবি ধারী নেতাদের নিয়ে ঢিলে ঢালা ভাবে চলছে জেলা ছাত্রদলের কার্যক্রম। একাধিক সূত্রে জানা যায়, কমিটিতে লবিং করা ভাইয়ের লোকেরা ব্যতীত কেউ হতে পারে না নেতা। এক্ষেত্রে ফেসবুকে থাকতে হয় নেতাকে তৈলমর্দন ছবি। কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের ও তদবির ছাড়া কার্যক্রম বা মিছিল মিটিং করে লাভ হয় না।

এমন কি ২ মিনিটের মিছিল করে ১০টি করে ছবি না তুলতে বর্তমান কর্মীরা আন্দোলনে মজা পান না। এছাড়াও অনেকে দলীয় কোন্দলে কোণঠাসা। অনেক সময় একই ব্যানারে ৩ টি গ্রুপের মিছিল হয় ২২ জন নিয়ে।

রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়া সাংগঠনিক কর্মসূচিও দীর্ঘদিন নেই। ফলে সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষী নিয়মিত ছাত্ররা উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলছেন। তারা আরো বলেন, নিয়মিত কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্বে জট তৈরি হয়েছে। এতে করে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম ও নতুন নেতৃত্বের জন্য ছাত্রদলের নেতৃত্ব নিয়মিত ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়াড় দাবি জানান অনেকেই। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুনের সাথে মেসেজের যোগাযোগের চেষ্টা করে ও তার সদুত্তর পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।

সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম বলেন, সারা দেশে ইউনিট কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, এ উদ্দেশ্য কর্মী সম্মেলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ইনশাআল্লাহ কর্মী সম্মেলন এর পর কমিটি হবে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান।ঈদের পর পরই জেলা ছাত্রদল নেতৃত্বে আসবে নতুন ছাত্ররা।আগামীর আন্দোলন সংগ্রামে যারা বুক চেতিয়ে দাঁড়াবে তারাই ছাত্রদলের নেতা হবে।