‘দাঁড়ালি না কেন’, বলেই অটোরিকশাচালককে পেটালেন পুলিশ কর্মকর্তা

প্রকাশিত: ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২৪

নাটোরের সিংড়ায় এক অটোরিকশা চালক যেতে না চাওয়ায় তাঁকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম রেজার বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এরইমধ্যে এ ঘটনার ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা সিংড়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সেলিম রেজা। ভুক্তভোগী ওই রিকশাচালকের নাম মো. হারুন আলী। তিনি সিংড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাইশা গ্রামের বাসিন্দা।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, অটোরিকশা নিয়ে চালক হারুন আলী দমদমা থেকে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলেন। এ সময় চালক উপজেলা পরিষদ রোডের দেশ ফার্নিচার দোকানের সামনে পৌঁছালে এএসআই মো. সেলিম রেজা রিকশা থামান। এরপর এএসআই, এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন তার রিকশায় উঠে বসেন এবং তাদের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যেতে বলেন। এসময় চালক এএসআইকে বলেন, ‘স্যার মিটারের তার সংযোগ লুজ হয়ে গেছে, গাড়ি যাচ্ছে না। অনেক কষ্টে আমি হাত দিয়ে তার ধরে এ পর্যন্ত এসেছি।’

এরপর ভিডিওতে এসআইকে বলতে শোনা যায়, ‘আরে বেটা আমি তোরে বলছি তুই যা, একেবারে কান ফাটাই ফেলাবো যা যা।’ এসময় অকথ্য ভাষায় চালককে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এএসআই ক্ষুদ্ধ হয়ে তার হাতে থাকা টর্চলাইট দিয়ে চালকের মাথায় আঘাত করতে থাকেন।

পরে আবারো দ্বিতীয় দফায় চালককে মারধর করতে দেখা গেছে। এসময় চালকের কান্নায় আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের ধমক ও গালি দিয়ে সরিয়ে দেন এএসআই। এরপর চালক ওই এএসআইসহ তিনজন রিকশা নিয়ে চলে যান।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালক মো. হারুন আলী বলেন, রাতে দমদমায় আমার রিকশার মিটারের তার ছিঁড়ে যায়। আমি এক হাত দিয়ে তার চেপে অনেক কষ্টে বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এসময় কোর্ট মাঠ পার হলে দুই পুলিশসহ তিনজন রিকশা থামান। তারা আমাকে বলেন, ‘তোক সিগন্যাল দিলাম, তুই দাঁড়ালি না কেন ‘ আমি বললাম, আমি বুঝতে পারিনি স্যার। আমার গাড়ির মিটারের একটি তার ছিঁড়ে গেছে তাই মেরামত করতে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিলাম। এসময় তিনজন আমার রিকশায় চড়ে বলে চল থানায়। এরপর আমাকে ওই এএসআই পুলিশ অনেক মারধর করতে থাকেন। পরে আমার নষ্ট গাড়িতে তিনজন উঠে জোর করে আমাকে দিয়ে টেনে সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে এএসআই মো. সেলিম রেজা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি কোনো রিকশাচালককে মারধর করেননি। রিকশাচালক নেতা শরিফ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর কাছে প্রয়োজনে আপনি জানতে পারেন।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, ‘এ বিষয়টি আমি জানি না। কী ঘটেছে খতিয়ে দেখব।’