চুল পড়া রোধে রয়েছে আধুনিক চিকিৎসা প্রকাশিত: ১২:২২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫ চুল বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি চুল পড়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। এর বেশি হলে বা পুনরায় নতুন চুল না গজালে তা এক ধরনের রোগ। চুল পড়ার কারণ : মানুষের চুল পড়ার কারণগুলোর মধ্যে ফিজিওলজিক্যাল ও প্যাথলজিক্যাল সমস্যা অন্যতম। এ ছাড়া মানুষের দেহে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা ও ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি হলে চুল পড়ে। অতিরিক্ত ওজন কমাতে অনিয়ন্ত্রিত ডায়েট কন্ট্রোল করলেও চুল পড়ে। আবার যারা শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টিকর খাদ্য পায় না, অ্যানিমিয়া হয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে তাদের বেশি চুল পড়ে। এর বাইরে অনেকের আকস্মিক চুল, ভ্রƒ ও দাড়ি কমে যায়। একে বলে অ্যালোপেশিয়া এরিয়েটা। অনেকের চুল-দাড়ি, চোখের পাতা সব পড়ে যায় একে অ্যালোপেশিয়া ইউনিভার্সেলিস বলে। এ দুটি লক্ষণকে বলা হয় অটোইমিউইন ডিজিজ। এছাড়াও ভার্টিগো বা শ্বেতীরোগ, বোলাস ডিজিজ, কিডনি বিকল ও ক্যানসারের কারণে চুল পড়ে থাকে। পরিবেশ যতটা দায়ী : দেশে কর্ম ও পরিবেশগত কারণে অনেক মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটে যেমন- দীর্ঘক্ষণ ধুলোবালিযুক্ত পরিবেশে অবস্থান, নিয়মিত হেলমেট ব্যবহারে অতিরিক্ত মাথা ঘামা, নিদ্রাহীনতা, হেয়ার স্টাইলে পরিবর্তন, ক্রিম, সিরাম জাতীয় কসমেটিক ব্যবহার, ইলেকট্রিক হিট, হিয়ার রিবন্ডিং ও কালার করা ইত্যাদি চুল পড়ার জন্য দায়ী। এর বাইরে বংশগত কারণ ও বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও চুল পড়ে থাকে। পরিবেশগত ও জিনগত কারণে চুল পড়ার পাশাপাশি মানুষের শরীরে টেস্টস্টোরেন নামক এক প্রকার হরমোন আছে। যে উপাদানটি বাংলাদেশের মানুষের শরীরে বেশি দেখা যায়। প্রকৃতির নিয়মে এটি শরীরে মধ্যে ভেঙে ডিএইচটি বা ড্রাই-হাইড্রো টেস্টোস্টেরেন তৈরি করে। আর বংশত কারণে যাদের শরীরে বেশিমাত্রায় ডিএইচটি উৎপন্ন হয় তাদের চুলও বেশি পড়ে। আধুনিক চিকিৎসা : বংশগত কারণে চুল পড়লে প্রাথমিক অবস্থায় এটি রোধ করতে ও পুনরায় চুল গজাতে সাহায্য করে- এমন কিছু ওষুধ, যেমন- ওয়েন্টমেন্ট (মলম) ও মুখে খাওয়ার ইনস্টোরয়েড, ডওটামেক্স জাতীয় ক্যাপসুল দেওয়া হয়। এতে কাজ না হলে থেরাপির পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি থেরাপি, মাইক্রোনিডিলিং থেরাপি অর্থাৎ মেশিনের সাহায্যে চুলের গোড়া শক্ত করার পদ্ধতি, স্টিমসেল থেরাপি (মাথার ভেতরে এক ধরনের ইনজেকশন) দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাদের মাথা একেবারে টাক হয়ে গেছে, স্থায়ী সমাধানের জন্য তাদের হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রতিকারের উপায় : এ ক্ষেত্রে প্রথম পরামর্শ হলো- ট্রান্সফ্যাটমিশ্রিত ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্য পরিহার করা, নিয়মিত ঘুম ও পরিমিত খাদ্যাভাস মেনে চলা। পাশাপাশি চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার, বিউটি পার্লার বা জেন্টস পার্লারে চুলে হিট দেওয়া ও স্ট্রেইট বা সোজা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করা ও কিছু খাবার, যেমন- দেশি বাদাম, চীনাবাদম, কাঁচা ছোলা, মিষ্টিকুমড়ার বিচি খেলে চুল পড়া কমে যায়। লেখক : সহকারী অধ্যাপক; চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চেম্বার : ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক, সাবামুন টাওয়ার, পান্থপথ, ঢাকা। ০১৭০৭০১১২০০; ০১৭৩০৭১৬০৬০ SHARES লাইফস্টাইল বিষয়: অ্যালোপেশিয়াচুলসমস্যা