পরের বন্ড কে?

প্রকাশিত: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫

জেমস বন্ড হিসেবে আপনি কাকে দেখতে চান? ড্যানিয়েল ক্রেইগ জামানা শেষে বহুল চর্চিত যে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বন্ড ভক্তদের মধ্যে, সেই প্রশ্নটিই নতুন করে উসকে দিয়েছেন জিরোজিরোসেভেনের দায়িত্ব নেওয়া প্রযোজনা সংস্থা অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজোস।

তিনি এক্সে তার ৬৮ লাখ ফলোয়ারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন,‘নতুন বন্ড হিসেবে আপনাদের পছন্দ কে?’

বিবিসিও সেই পছন্দের পাত্রের নাম খোঁজার চেষ্টা করেছে।

বেজোসের প্রশ্নের উত্তরে ‘সুপারম্যান’ তারকা হেনরি ক্যাভিলের নাম বন্ড হিসেবে প্রস্তাব করেছেন সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ। এবং ক্যাভিল নিজেও বন্ড হতে তার আগ্রহের কথা অতীতে প্রকাশ করেছিলেন।

২০০৬ সালে ‘ক্যাসিনো রয়্যালের’ জন্য যখন ক্রেইগকে বেছে নেওয়া হয়েছিল, তখন ক্যাভিলই ছিলেন দ্বিতীয় সেরা।

‘ক্যাসিনো রয়্যাল’ সিনেমার পরিচালক মার্টিন ক্যাম্পবেল বছর দুই আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন বন্ড হিসেবে ক্যাভিল ভালো করতে পারতেন, যদি না ক্রেইগ জায়গাটা দখল করে নিতেন।

“সমস্যা আরেকটা আছে, ক্যাভিলকে বেশ তরুণ দেখায়।”

ছয় দশকের বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্ট জেমস বন্ডের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল ইয়ন ফিল্মসের দুই প্রযোজক মাইকেল জি উইলসন ও বারবারা ব্রোকলি। দীর্ঘ ৬৩ বছর পর বন্ডের উপর সেই একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে ইয়ন ফিল্মস।

এর কারণ গেল সপ্তাহের শেষ নাগাদ অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিও ও ইয়ন ফিল্মসের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। ওই চুক্তির ফলে উইলসন ও ব্রোকলির হাতে এককভাবে বন্ডের সৃজনশীল নিয়ন্ত্রণ আর থাকছে না।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে উইলসন ও ব্রোকলি সহ স্বত্বাধিকারী হিসেবে থাকছেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে। সিনেমার নতুন পর্বের সিদ্ধান্ত থেকে অভিনয়শিল্পী নির্বাচনসহ সৃজনশীল সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবে অ্যামাজন এমজিএম।

সিনেমার নতুন পর্ব কবে আসবে, আগামী বন্ড কে হবেন, অন্যান্য অভিনয়শিল্পী কারা হচ্ছেন-সব কিছুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এখন অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওর হাতে।

১৯৬২ সালে শন কনেরি অভিনীত জেমস বন্ডয়ের প্রথম ছবি ‘ড. নো’ দিয়ে ব্রিটিশ গুপ্তচরকে প্রথম পর্দায় আনা হয়। আর ২০০৬ সালে ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’ দিতে শুরু করে গত ১৫ বছরে অত্যন্ত ব্যবসাসফল পাঁচটি জেমস বন্ড সিনেমায় অভিনয় করার পর ব্রিটিশ স্পই চরিত্রটিকে ২০২১ সালে বিদায় জানান ড্যানিয়েল ক্রেইগ। ২০২১ সালের শেষের দিকে ‘নো টাইম টু ডাই’ মুক্তির মধ্য দিয়ে তার বন্ড অধ্যায় শেষ হয়।

পর জেমস বন্ডের নতুন সিনেমা হবে এই সিরিজের ২৬তম সিনেমা।

২০২২ সাল থেকে নতুন বন্ড খুঁজতে আঁটঘাট বেঁধে নামেন উইলসন ও ব্রোকলি, যদিও তার কোনো ফলাফল আসেনি।

ক্রেইগের বিদায়ের পর সে সময় বন্ড ফ্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, দুটি শর্তে কোনো নড়চড় নেই। সেগুলো হল বন্ডের বয়স এবং উচ্চতা। নতুন বন্ডকে ৩০ থেকে ৩২ বছর বয়সী হতে হবে, যাতে দীর্ঘসময় তাদের সঙ্গে সেই অভিনেতা থাকতে পারেন। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল উচ্চতা। নতুন বন্ডের উচ্চতা কম হলেও হতে হবে ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি।

এছাড়া নির্মাতারা চাইছিলেন, বন্ড হয়ে যে অভিনেতাই আসুন না কেন, তাকে আগামী অন্তত এক থেকে দেড় দশক বন্ড হয়ে থাকতে হবে। অভিনেতার অভিনয় গুণ এবং যাবতীয় শর্ত পূরণ হলে তবেই নতুন বন্ডের নাম ঘোষণা করা হবে।

উইলসন ২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “মনে রাখা দরকার, বন্ড কিন্তু একজন সৈনিক। সে যুদ্ধে লড়েছে। হয়তো এসএএসে ছিল কিংবা অন্য কোনো স্পেশাল ইউনিটে।”

কেভিলের ভাষ্য, “বন্ড হতে আমার ভালোই লাগবে। এটা ভেবেই আমি দারুণ রোমাঞ্চিত।”

এখন উইলসনের ভাষ্য, বর্তমানে বন্ড হতে ৪২ বছর বয়স ক্যাভিলের জন্য একটু বেশি বয়স হয়ে গিয়েছে।

“বিশেষ করে তাকে যদি পরপর কয়েকটি সিনেমার জন্য ভাবা হয়।”

বেজোসের প্রশ্নে বন্ড চরিত্রে টম হার্ডি, অ্যারন টেলর-জনসন ও ইদ্রিস এলবার নাম এসেছে।

ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টের এই কালজয়ী চরিত্রের জন্য ৩৪ বছর বয়সী অ্যারন টেলর-জনসন প্রস্তাব পেয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছিল।