রমজানে যানজট নিয়ন্ত্রণে বহুমুখী পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২৫

রমজানে মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, রমজানে যানজট নিরসনে বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সব কটি থানার মোবাইল টিম সড়কে কাজ করবে। একই সময়ে সড়কে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত ফোর্স থাকবে আড়াই শ। ৬০০ ছাত্র ভলান্টিয়ারও কাজ করবেন। রাজধানীর ট্রাফিকব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য বছরব্যাপী সড়কে কাজ করা সাড়ে চার হাজার ট্রাফিক সদস্য তো থাকবেনই।

রমজানে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আজ থেকে মাঠে নামছে পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ, কমিউনিটি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ দল। এ ছাড়া বিপণি কেন্দ্রগুলোকে নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের নতুন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘রমজানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে পুলিশের অতিরিক্ত জনবল মোতায়েন করা হয়েছে। ইফতারের আগে পিক আওয়ারে বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তারা সড়কে শৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া থানা-পুলিশের সদস্যরা যৌথভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনে দায়িত্ব পালন করবেন।’

তিনি বলেন, ‘রমজানে মানুষের নিরাপত্তায় বিশেষভাবে কাজ করবে ডিএমপি। নগরবাসী নিরাপদে ঘরে ফিরে যেন ইফতার করতে পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, রমজান মাসে নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। রমজানে বিশেষ অভিযান শুরু করছে ডিবি। এটা একধরনের বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সাদাপোশাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে অবস্থান করে অপরাধীদের শনাক্ত করবেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, রোজার সময় শপিংমল, ব্যাংক, বিমা, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও সদরঘাটসহ অন্য জায়গায় মানুষের উপস্থিতি বাড়ে। এসব জায়গায় কেউ যেন নাশকতা করতে না পারে, সে জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। দূরের যাত্রাপথ, বিশেষ করে বাসে কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আগে থেকেই ডিবির তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, ‘রমজানে অফিস সময়সূচি পরিবর্তন, ঈদের বাড়তি কেনাকাটা ও বাড়িফেরার সময় হয়ে এলে চাপ বাড়ে সড়কে। প্রতিবছরের মতো এবারও যানজট নিরসনে বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সড়কের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে আমরা কাজ করছি। রমজানে বাড়তি সতর্কব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের সঙ্গে বাড়তি ফোর্সও কাজ করবে।’

ডিএমপি সূত্রমতে,  প্রতিবছরই সড়ক শৃঙ্খলা ধরে রাখতে সায়েদাবাদ, গাবতলী, মহাখালী, ফুলবাড়িয়াভিত্তিক বিভিন্ন টার্মিনালের পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক আয়োজন করা হয়। গতকাল প্রথম সভা অনুষ্ঠিক হয় গাবতলীতে। পর্যায়ক্রমে অন্য টার্মিনালগুলোতে সভার আয়োজন করা হবে।  গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত বিভিন্ন ইন্টারসেকশনের মোড়ে মোড়ে যেন রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটো রিকশা যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যানবাহনের গতি ব্যাহত না করে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা। প্রধান সড়কে হকাররা কোনো অবস্থাতেই যেন পসরা সাজিয়ে বসতে না পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। এ ছাড়া টার্মিনাল, মার্কেট, বিপণিবিতানে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা ও প্রয়োজনীয় ওয়াচ টাওয়ার রাখার কথাও জানিয়েছে ডিএমপি।

রমজান মাসে সরকারি অফিসের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্য বছরের মতো এবারও সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন ছাড়া বাকি পাঁচ দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অফিস চলবে। সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য এ সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। অফিস সময়সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে ট্রাফিকব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।