ঢাকার মাঠে যেভাবে মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেটারের

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজের মৃত্যু নাড়া দিয়েছিল পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। ক্রিকেট মাঠে চোট পাওয়ার সবচেয়ে মারাত্মক আর বিষাদময় উদাহরণ সম্ভবত এটিই। ২০১৪ সালে শেফিল্ড শিল্ডের এক ম্যাচে শন অ্যাবটের এক বাউন্সার গিয়ে আঘাত হানে ফিল হিউজের মাথায়। সেই যে লুটিয়ে পড়েছিলেন মাঠে, আর ওঠা হয়নি। দুই দিন পর শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সম্ভাবনাময় এ ব্যাটসম্যান।

১৯৯৮ সালে ঢাকার মাঠে এমনই এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার রমন লাম্বা। প্রিমিয়ার লিগের দল আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলতে এসে ফিল্ডিংরত অবস্থায় বলের আঘাত পেয়েছিলেন লাম্বা। তিনদিন পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। খুব সম্ভবত বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিয়োগান্তক ঘটনাও হয়ে আছে রমন লাম্বার মৃত্যু।

দিনটি ছিল ১৯৯৮ সালের ২০ শে ফেব্রুয়ারি। ঢাকার ঘরোয়া টুর্নামেন্টে জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী এবং মোহামেডান। খেলার শেষদিকে ব্যাটসম্যানের খুব কাছে শর্ট লেগে ফিল্ডিং করতে আসেন আবাহনীর হয়ে খেলা রমন লাম্বা। তার কয়েক মুহূর্ত পরেই মেহেরাব হোসেন অপির এক শর্টে গুরুতর আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ভারতের হয়ে একসময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ৩৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার রমন লাম্বাকে।

সে সময় রমন লাম্বার কাছাকাছিই দাঁড়িয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল, লাম্বা ঠিক আছে কি না, জিজ্ঞেস করতে যান। রমন বলেন, ‘ম্যায় তো মার গায়া বুলি! (আমি তো মরে গেলাম বুলবুল!)। প্রথমে চোটটা অত গুরুতর না লাগলেও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন লাম্বা। লাম্বাকে পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়। বেশ কয়েকজন ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দিল্লি থেকে উড়িয়ে আনা হয় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তাতেও কাজ হয়নি, লাম্বা আর ফেরেননি। কোমায় থেকে ৩ দিন পর মৃত্যুবরণ করেন।

দুর্ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী আবাহনীর ম্যানেজার শেখ মামুন স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন, শর্ট বলে মেহরাব হোসেন অপি পুল করলে বলটি রমন লাম্বার মাথায় লাগে আর ১০ গজ দূরে পাইলট সেই বলটি ক্যাচ ধরেন। মেহরাব হোসেন অপি আউট, ম্যাচ আমি জিতেছি, কিন্তু রমন লাম্বাকে আর পাইনি। তিনদিন অজ্ঞান থাকার পর সে হাসপাতালে মারা যায়।