‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন

প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০২৪

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে আসা গরিব-অসহায় মানুষগুলোর শরীরে বিভিন্ন স্থানে পচনের কারণে অপারেশনের প্রয়োজন হলে নিজে ব্লেড দিয়ে তা কেটে ফেলতেন আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার! এতে অসহায় মানুষগুলো অমানবিক কষ্ট পেতেন, আর্তনাদ করতেন। কিন্তু পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন। রীতিমতো টর্চার সেল চালাছিলেন তিনি। রবিবার (৫ মে) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন উর রশীদ।

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বিষয়ে কথা বলেন হারুন।তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের মতো সাইকোপ্যাথ কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি নির্যাতন করে ও ব্লেড-ছুরির সাহায্যে নিজেই অপারেশন করতেন। টর্চার সেলে মানুষকে পেটাতেন, পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তাদের তিনি ‘বানর’ বলে অভিহিত করতেন। মিল্টন স্বীকার করেছেন  এসব করে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন। আমরা তার টর্চার সেল থেকে আলামত জব্দ করেছি। কথিত অপারেশন থিয়েটার থেকে ব্লেড-ছুরি জব্দ করেছি।

হারুন বলেন, মিল্টন সমাদ্দার ভয়াবহ অপরাধ করেছেন এবং তা একটি-দুটি নয়। তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভয়াবহ। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার অ্যাকাউন্টে এখনও ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আছে। এতগুলো টাকা থাকার পরও তিনি কাউকে চিকিৎসা করাননি। তিনি নিজেই হয়ে গেছেন অপারেশন থিয়েটারের হেড। তার অপারেশন থিয়েটারে থাকতো একটা ছুরি ও কিছু ব্লেড। তিনি এগুলো দিয়েই নিজেই অপারেশন করাতেন। এরকম ভয়াবহ, অমানবিক আচরণ, অসভ্য আচরণ, এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্যই তো লজ্জাজনক। যারা তার সঙ্গে জড়িত, যারা পেট্রোনাইজড করেছে, সহযোগিতা করেছে, ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য যারা পেট্রন করেছে, ফাউন্ডেশনের মেম্বার তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হারুন বলেন, যে ছেলেটা সেই উজিরপুর থেকে বাবা পিটিয়ে ঢাকায় এসে ওষুধের দোকানে চুরি করেছে, এরপর একটা আশ্রম গড়ে তোলে। যেখানে সে অসহায়, গরিব শিশু, বৃদ্ধ, প্যারালাইজড, বাকপ্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে সংগ্রহ করে আশ্রমে নিত। তাদের দেখিয়ে সে ফেইসবুকে ফলোয়ারের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতো। সেই টাকা আবার সে খরচ করতো না অসহায়দের পেছনে।