হাসপাতালের একটিতেও নেই ব্লাড ব্যাংক প্রকাশিত: ৫:৩৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫ • প্রয়োজনে মেলে না, কখনো বা ফেলে দিতে হচ্ছে রক্ত • মুমূর্ষু রোগীদের ভরসা ফেসবুক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বরগুনা জেলার ১২২টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ৬টি সরকারি হাসপাতালের একটিতেও নেই ব্লাড ব্যাংক। এতে জনে জনে খোঁজ করে রক্ত ব্যবস্থা করতে হচ্ছে মুমূর্ষু রোগীর স্বজনদের। পরিচিতজনদের কাছে রক্ত না পেলে খোঁজ করতে হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো রক্তের জোগান দিলেও সংরক্ষণের সুবিধা না থাকায় অনেক সময় রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে পূর্ণাঙ্গ ব্লাড ব্যাংক চালু করা যাচ্ছে না। এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন জেলার প্রায় ১২ লাখ মানুষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বরগুনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতি মাসে ২০০ ব্যাগেরও বেশি রক্তের প্রয়োজন হয়। এছাড়া জেলায় সিজারিয়ান ও অন্যান্য সার্জারি মিলিয়ে মাসে প্রায় ৫০০টির মত অপারেশন হলেও প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রক্ত সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের একমাত্র ভরসা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। স্বেচ্ছাসেবকরা চেষ্টা করলেও সবসময় সময়মতো কাঙ্ক্ষিত রক্ত পাওয়া যায় না বলে জানা গেছে। সরজমিনে বরগুনা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রক্ত নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্বজনরা। কেউ রক্ত দিতে এসেছেন, কেউবা রক্ত নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। এদিকে প্যাথলজিতে চলছে দৌড়ঝাঁপ। রক্তের অভাবে কেউ ছুটছেন আত্মীয়-স্বজনের কাছে, কেউবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্য চাইছেন। বিশেষ করে রাতের বেলায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠে। এছাড়া নেগেটিভ গ্রুপের পেতে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। ব্লাড ব্যাংক না থাকায় সময়মতো রক্ত দিতে ও রক্ত নিতে পারছেন না রোগী এবং রক্তদাতারা। সদর হাসপাতালে প্রতিদিন থ্যালাসেমিয়া, সিজারিয়ান ও সার্জারি বিভিন্ন রোগী ভর্তি থাকে। এজন্য প্রতিদিনই রক্ত দিতে হাসপাতালে আসেন বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা।স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর অভিযোগ, বরগুনা জেলায় কোন ব্লাড ব্যাংক না থাকায় অনেক সময় সিজারিয়ান রোগীদের রক্ত দেওয়ার পর সেই রক্ত না লাগলে রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগের অভাবে ফেলে দেওয়া হয়। আবার অনেক সময় গভীর রাতে কারো রক্তের প্রয়োজন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় রক্ত দাতাদের গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। তাই বরগুনায় একটি ব্লাড ব্যাংক অথবা রক্ত সংরক্ষণের জন্য হাসপাতালে ফ্রিজ স্থাপনের দাবি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর। সদর উপজেলার ঢুলুয়া গ্রামের নাঈম নামের এক রোগীর স্বজন জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলেছেন রক্ত লাগবে। তাই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও আমার স্বজনদের ফোন দিয়েছি। এখনো রক্ত জোগাড় হয়নি । হাসপাতালে যদি একটা ব্যবস্থা থাকতো তবে আমাদের এই দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুরতে হতো না। থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু সন্তান নিয়ে হাসপাতালে আসা সাদ্দাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমার সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। অনেক সময় ২৬ দিন পরে আবার কখনো দুই মাস পর পর তাকে রক্ত দিতে হয়। আমি সব সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে রাখি। যদি ব্লাড ব্যাংক থাকতো তবে আমাদের রক্তের জন্য কষ্ট অনেকটাই কমে যেতো। রক্ত নিয়ে কাজ করা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক আতিকুর রহমান সাবু জাগো নিউজকে বলেন, রক্ত নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবকদের প্রায়ই রাতের বেলায় সমস্যায় পড়তে হয়। আমরা চেষ্টা করি ডোনারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার। অনেক সময় যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য ব্যর্থ হই। আবার অনেক সময় ডোনারদের বাড়িতে গিয়ে নিয়ে আসতে হয়। এতে বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়। সিজারিয়ান রোগীর জন্য রক্ত দেওয়ার পরে অনেক সময় লাগে না। তখন সেটি ফেলে দেওয়া হয়। এটি আমাদের কষ্ট দেয়। ব্লাড ব্যাংক থাকলে রক্ত সংরক্ষণ করা যেত এবং অন্য রোগীকে কে দেওয়া যেত। SHARES জাতীয় বিষয়: ডায়াগনস্টিকরক্তেরহাসপাতালের