মহাসড়কে ভয়াবহ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: বিকট শব্দে ঘুম ভাঙলো মানুষের প্রকাশিত: ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৫ চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহর বাইপাস বিরাসারে এলপি গ্যাসবাহী ট্রাক উল্টে গিয়ে মহাসড়কের গর্তে আটকে থাকা অপর একটি প্রাইভেট কারের উপর ছিটকে পড়ে। এ সময় হঠাৎ করে প্রাইভেটকার এবং ট্রাকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রাকটিতে থাকা অন্তত দুই শতাধিক সিলিন্ডার বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। আজ বুধবার (৪ জুন) ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ট্রাক-প্রাইভেটকার পুড়ে ভস্মীভূত হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দুই ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এলাকাবাসী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্র জানান, ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকার শাহবাগ থেকে একটি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার আসছিল। এ সময় ট্রাকটি বর্ডার বাজার পৌঁছার ঠিক আগমুহূর্তে বিরাসার এলাকায় খানাখন্দে ভরা মহাসড়কটির একটি বড় গর্তে উল্টে যায়। এ সময় ওই গর্তে আগে থেকে আটকে থাকা অপর একটি প্রাইভেটকারের ওপর ছিটকে পরে ট্রাকটি। একপর্যায়ে ট্রাক এবং প্রাইভেটকারে আগুন ধরে যায়। পরে বিকট শব্দে একেকটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মহাসড়কের উভয়পাশে আটকা পড়ে অসংখ্য যানবাহন। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। এ সময় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকে যান চলাচল। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভেতর দিয়ে বিকল্পপথ হিসেবে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মাহাবুবুর রহমান সাকিব বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে অটোরিকশা নিয়ে লালপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় বিরাসার মোড়ে একটি প্রাইভেটকার রাস্তায় খাদে আটকে যায়। এ সময় প্রাইভেটকারের যাত্রীরা ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। এর মধ্যে পেছন দিক থেকে গ্যাস সিলিন্ডারভর্তি ট্রাকটি এসে প্রাইভেটকারের ওপর ছিটকে পড়ে। এ সময় প্রাইভেটকারের সামনের দিকে ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। পরে ট্রাকে থাকা সিলিন্ডারগুলোতে আগুন ধরতে শুরু করে। একপর্যায়ে সবগুলো সিলিন্ডার একে একে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে শুরু করে। পরে আমি তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসকে জানিয়েছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার মূল কারণই হচ্ছে মহাসড়কের রাস্তা। রাস্তাটি একেবারে গর্তে ভরা নাজুক। এই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করার মতো না। রাস্তাটি ঠিক থাকলে এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলামিন বলেন, ‘আমি বাসায় ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে শুনে ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় এসে দেখি গ্যাস সিলিন্ডারের গাড়ি উল্টে আছে। এ সময় একটার পর একটা সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হচ্ছে। পরে আমরা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই।’ তিনি জানান, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মহাসড়কের নাজুক অবস্থা। অচিরেই এটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে অনুরোধ জানান তিনি। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকারের ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্তত কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, দুর্ঘটনার পরপর পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে কাজ শুরু করে। দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পরে পুলিশ বিকল্পপথ হিসেবে ছোট যানবাহনগুলোকে শহরের ভেতর দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সকাল ৯টা) উদ্ধারকাজ চলছিল। SHARES জাতীয় বিষয়: নিয়ন্ত্রণেমহাসড়কেরহতাহত