হাঁটুর ব্যথা দূর করার কার্যকর উপায়সমূহ

প্রকাশিত: ১২:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২৫

আজকের ব্যস্ত জীবনে হাঁটুর ব্যথা একটি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। বয়সের সঙ্গে এর সম্পর্ক থাকলেও, আজকাল অনেক তরুণ-তরুণীও হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন। দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ, অতিরিক্ত ওজন, এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এর পিছনে বড় কারণ। দিনে দিনে এই সমস্যা বাড়লেও, প্রতিদিন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া মোটেও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়।

হাঁটুর ব্যথা হলে কী করবেন? হাঁটুর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

 

. ব্যথার উৎস নির্ধারণ করুন

প্রথমেই বুঝে নিতে হবে এই ব্যথা কিসের কারণে হচ্ছে। এটা কি চোটের ফলে? না কি আর্থ্রাইটিস, যেমন অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস? কখনও কখনও পাতেলোফেমোরাল পেইন সিনড্রোম, মেনিসকাস ইনজুরি, বা লিগামেন্ট ইনজুরি-র কারণেও ব্যথা হতে পারে। ব্যথা হালকা হলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে উপশম সম্ভব হলেও, দীর্ঘস্থায়ী বা ক্রমবর্ধমান ব্যথার ক্ষেত্রে একজন পেইন ফিজিশিয়ানের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

 

. পাকে বিশ্রাম দিন

চোটজনিত ব্যথা হলে, হাঁটুর ওপর চাপ কমানো গুরুত্বপূর্ণ। পা উঁচু করে শুয়ে বিশ্রাম নিন। এতে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে এবং ইনফ্ল্যামেশন কমে। ব্যথা কমে আসলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক মুভমেন্ট শুরু করুন।

 

. বরফ সেঁক ব্যবহার করুন

হাঁটুতে ফুলে যাওয়া বা আঘাত পেলে, দিনে ২–৩ বার বরফ সেঁক দিন। প্রতি সেশনে ১০–১৫ মিনিট বরফ ব্যবহার করুন। বরফের সঙ্গে কমপ্রেশন ব্যান্ডেজ ব্যবহার করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যায়।

 

. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রমাণিত বিষয় হলো অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্য ও ডায়েটারি পরিবর্তনের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে হাঁটুর ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

 

. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

ব্যথা না থাকলে বা কম থাকলে, প্রতিদিনের রুটিনে কিছু হালকা ব্যায়াম রাখুন। যেমন:

 

  • লেগ রেইজ ও হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচিং হাঁটুর পেশি শক্তিশালী করে।
  • সাইক্লিং বা সাঁতার হাঁটুর মুভমেন্ট বাড়ায় এবং জয়েন্টে চাপ কম ফেলে।
  • যোগব্যায়াম বিশেষ করে “বজ্রাসন”, “সুখাসন”, এবং “ত্রিকোণাসন” হাঁটুর নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।

 

হাঁটুর ব্যথা এড়াতে কিছু জরুরি টিপস

 

  • সবসময় নরম, কুশনযুক্ত ও সাপোর্টিভ জুতো পরুন।
  • এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকবেন না। প্রতি ঘণ্টায় একবার করে উঠে হাঁটুন বা স্ট্রেচিং করুন।
  • ভারী জিনিস তুলতে গেলে কোমর থেকে শক্তি দিন, হাঁটুর ওপর অতিরিক্ত চাপ দেবেন না।
  • পর্যাপ্ত জল পান করুন এবং প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-D যুক্ত খাদ্য খান, যাতে জয়েন্ট সুস্থ থাকে।

 

চিকিৎসকের সাহায্য কখন প্রয়োজন?

যদি ব্যথা নিয়মিত হয়, হাঁটতে সমস্যা হয়, বা রাতে ঘুম ভেঙে যায় ব্যথায়—তবে দেরি না করে একজন Interventional Pain Specialist-এর পরামর্শ নিন।