স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনসার সদস্যরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

বুধবার সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সবচেয়ে বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে আনসারদের ভূমিকা হবে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৩ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে, যার মধ্যে তিনজন অস্ত্রসহ দায়িত্ব পালন করবেন এবং বাকি ১০ জন থাকবেন অস্ত্রবিহীন। অস্ত্রবিহীন সদস্যদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী থাকবেন। এছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে একজন অস্ত্রধারী আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, নির্বাচনের সময় মোট নয় দিন আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন এবং পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তারা হবে মূল শক্তি।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি বাহিনী সবসময় দেশের নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও জাতীয় উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। নিজেদের জীবন ও স্বার্থের তোয়াক্কা না করে তারা দায়িত্ব, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে জাতির সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। তাই বাহিনীর সদস্যদের কল্যাণ ও কর্মজীবনের মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক ও দায়িত্বপূর্ণ অঙ্গীকারের অংশ।

তিনি জানান, এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থায়নে মোট ৩১টি যানবাহন কেনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি ট্রুপস ক্যারিয়ার, ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, ৪২ আসনের ৪টি বড় বাস, ২৪ আসনের ২টি মিনি বাস এবং ২টি অ্যাম্বুলেন্স।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় এ বাহিনীর সদস্যরা প্রায়ই ছুটি, বিনোদন ভ্রমণ বা অন্যান্য প্রয়োজনে যাতায়াতজনিত নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। তাদের এই ভোগান্তি কমাতে ও সুবিধা বাড়াতেই নতুন ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন এ পরিবহন সেবা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং বাহিনীর বৈধ পরিচয়পত্রধারী সদস্যদের জন্য নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম নিয়মিত চলছে। প্রতিদিনই অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে—গত পরশুদিনই আটটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে, আর নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, ততই অস্ত্র উদ্ধারের পরিমাণ বাড়বে। একসময় দেখা যাবে, বাইরে আর কোনো অবৈধ অস্ত্র বা হাতিয়ার অবশিষ্ট নেই।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।